জেনারেল সায়েন্স-১
"The most beautiful thing we can experience is the mysterious. It is the source of all true art and science. He to whom the emotion is a stranger, who can no longer pause to wonder and stand wrapped in awe, is as good as dead; his eyes are closed."-Albert Einstein.
আমরা কয়েকজন মিলে এই গ্রুপ খুলেছি মোটামোটি ১.৫ মাস আগে।দেড় মাসের মধ্যেও অনেক আলোচনা সমালোচনা হয়েছে।হোক,অইগুলা কেয়ার করা উচিত না।
“Weak people revenge. Strong people forgive. Intelligent people ignore.”-Albert Einstein
যাইহোক,গ্রুপ খোলার পর আমাদের প্রথম উচিত ছিলো-বিজ্ঞান কি জিনিস,Law কি,Hypothesis কি,Theory কি? এই বিষয়গুলো ক্লিয়ার করা।আমরা এইসব জিনিস নিয়ে আগে বলিনি-এইটা আমাদের ব্যর্থতা।এই টার্মগুলো যত্রতত্র নির্বিকারভাবে ব্যবহার করা হয়।এইগুলো দেখলে আমার খারাপ লাগে।আমরা একটা ইকুয়েশন থেকে দুই লাইন ম্যাথ করে আরেকটা ইকুয়েশন আনলাম।এই জিনিস থিওরি না।তাই,আজকে এই পর্বটা সেই বিষয়গুলো নিয়ে লেখা।তবে খুব বড় ডেসক্রিপশন দিবো না।
প্রথমে আসা যাক বিজ্ঞান কি জিনিস অইটাতে।
বিজ্ঞান :
"The man of science has learned to believe in justification,not by faith but by verification."-Thomas Huxley
সায়েন্স কি জিনিস তা সংজ্ঞায়িত করার জন্য এই উক্তি এনাফ।সায়েন্স জিনিসটা কোনো বিশ্বাস বা এই টাইপ কিছুর ধার ধারে না।সায়েন্সের মধ্যে অলৌকিকতা,আধিভৌতিকতা নেই।সায়েন্স আমাদের শেখায়,প্রকৃতি কিভাবে আচরণ করেন।অপার রহস্যময় প্রকৃতির একেকটা রহস্য উদঘাটন সায়েন্সের একেকটা অনন্য সফলতা।বিজ্ঞান হলো একগুচ্ছ জ্ঞানের সমষ্টি,যেই জ্ঞান ব্যাখা করবে-প্রকৃতি কিভাবে আচরণ করে,সেই জ্ঞান ব্যাখা করে-প্রকৃতির রহস্যময়তায় আধিভৌতিকতা নেই।এই জ্ঞান কিভাবে আসে?মানুষজন স্বপ্নে করোনার প্রতিষেধক দেখে 1. q7+6=13!! সেই জিনিস পাব্লিক খায়।এই জিনিস সায়েন্স না।সায়েন্সের ধারের কাছেও না।অথচ,একদল মানুষ দিনরাত গবেষণা করে করোনার জিনোম সিকোয়েন্স স্টাডি করে,মিউটেশন প্রতিরোধী ভ্যাক্সিন বের করার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।তাদের মূল্য আমাদের কাছে নেই।তাদের কয়েকটা অশ্লীল গালি দিতে আমাদের বাঁধে না।আমরা গ্যালিলিওকে বন্দী করেছি।আরও কত জন বিজ্ঞানী সত্য প্রতিষ্ঠা করতে তাদের প্রাণ দিয়েছেন।সবার নাম লেখতে গেলে অনেক বড় হবে।আমরা সকাল বিকাল ডারউইনকে গালি দেই।তার মতো মহান মানুষকে চাচা,মামা,আঙ্কেল বলে যাচ্ছেতাইভাবে অপমান করি।নেহায়েত,কিছু অন্ধ বিশ্বাসের জোরে এই ধরনের মহান- সুমহান মানুষকে আমরা অবাধে অপমান করি!তারা আমাদের দিয়েছেন অনেককিছু।যারা এইসকল মহান মানুষদের অবাধে অপমান করে,তারা Capra hircus ছাড়া আর কিছু বলে আমি মনে করি না।বিজ্ঞান কোনো জিনিসকে দেখবে,তার রহস্য ফিল করবে,ম্যাথমেটিকালি এনালাইসিস করবে,তারপর সেই এনালাইসিস এপ্লাই করে দেখবে।যদি তা মেলে তবেই তা হবে আসল বিজ্ঞান।
“It doesn't matter how beautiful your theory is, it doesn't matter how smart you are. If it doesn't agree with experiment, it's wrong.”-Richard Feynman
শেষবারের মতো আবার বলি,বিজ্ঞানে অলৌকিকতা নেই,আধিভৌতিকতা নেই। "It depends on justification."
আপাতত, বিজ্ঞান কি জিনিস এইটুকুই থাক।এখন আর কিছু টার্ম যেমন: Law, Theory, Hypothesis নিয়ে বলবো।থিওরি জিনিসটাকে হুটহাট করে এখানে সেখানে ব্যবহার করা হয়। আবার,যেই জিনিস থিওরি-তাকে হুটহাট বলে হাইপোথিসিস।এগুলো নিতান্তই হাস্যকর। যাইহোক,
Law:
Law মানে সূত্র। অবসার্ভেশান আর পরীক্ষা থেকে পাওয়া সূত্র। এই জিনিসের গাণিতিক রূপ থাকে।কিন্তু কেন কাজ করে,কিভাবে কাজ করে?তার কোনো ব্যাখা থাকে না।যেমন:নিউটনের ল অফ মোশান, ল অফ গ্র্যাভিটেশান, থার্মোডাইনামিক্সের ল, চার্লের সূত্র, বয়েলের সূত্র। এই সবগুলোর গাণিতিক রূপ আছে। কিন্তু ব্যাখা ঠিকঠাক নেই। F = GMm/r^2 এই জিনিস নিউটন জানতেন। কিন্তু এর ব্যাখা তার কাছে ছিলো না।তবে,এই জিনিসটা ছিলো অসাধারণ।গ্রহ নক্ষত্রের গতিও এই ল দিয়ে ব্যাখা করা যায়।কিন্তু,বেশ কিছু কেইসে নিউটনের ল কাজ করে না।আইনস্টাইন এসে সেটা ঠিক করলেন।তিনি প্রমাণ করলেন,নিউটনের ল অফ গ্র্যাভিটেশান আসলে তার দেওয়া ফিল্ড ইকুয়েশনের একটা সমাধান।তাই জেনারেল রিলেটিভিটিকে থিওরি বলা হয়।তারপর আসি,dW=Fds=PdV! Fds থেকে দুই লাইন অঙ্ক করলে আসবে Fds=PdV=dW এইটা থিওরি না।এইটাকে একটা অনুসিদ্ধান্ত বলা যেতে পারে।এরপর, আমরা জানি,আদর্শ গ্যাসের ইকুয়েশন PV=nRT! এইটাও ল!থিওরি না।কারণ,এইটা বেশিরভাগ কেইসে খাটবে না।তাহলে,ল হলো পর্যবেক্ষণ পরীক্ষা থেকে প্রাপ্ত একটা গাণিতিক সমীকরণ যার কোনো ব্যাখা বিশ্লেষণ নেই।
Hypothesis:
হাইপোথিসিস মানে অনুকল্প। মনে করি,সিয়াম ভাই একটা জটিল ঘটনা অবসার্ভ করলেন,যার উত্তর এখনো নেই।সিয়াম ভাই চিন্তা করার পর অই ঘটনার সম্ভাব্য কয়েকটা কারণ দেখালেন।এই সবগুলো কারণ একেকটা হাইপোথিসিস।মানে এগুলো প্রস্তাবিত ব্যাখা।একটার পর একটা হাইপোথিসিস ভুল প্রমাণ করে করে আমরা রহস্যের পর্দা উন্মোচন করি।তখন অই হাইপোথিসিসকে বলে থিওরি।
Theory:
থিওরি জিনিসটাকে এখানে ওখানে যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহার করা হয়।থিওরি হতে গেলে কোনো ঘটনাকে যথাযথ যুক্তি,প্রমাণ,এক্সপেরিমেন্ট,ম্যাথমেটিকাল অ্যানালাইসিস,কেন কাজ করে কিভাবে কাজ করে-এই সব গুলো জিনিস পার করে পরে আসতে হয়।মানে,কোনো থিওরিকে এখনো পর্যন্ত আবিষ্কৃত জিনিস দিয়ে হাজারো রকম ভাবে পরীক্ষায় পাশ করে আসতে হয়।তাহলে,থিওরির কি ফেইলিউর নেই? না নেই।থিওরি ভুল হয় না।থিওরি জেনারালাইজড হতে পারে।কোনো এক্সট্রিম কেইসে অন্য কোনো থিওরির সাথে সেটার কনফ্লিক্ট দেখা গেলে দুটোকেই জেনারালাইজড করার চেষ্টা করা হয়।থিওরি ভুল হয়ে বাতিল হয়ে যায় না।তবে,অনেক বড় রকমের নতুন প্রমাণ পাওয়া গেলে ভিন্ন কথা।মোস্ট অব দ্য টাইমস সেরকম হয় না।কারণ,অনেক কাঠঘর পুরিয়ে থিওরিকে প্রতিষ্ঠা করা হয়।তবে,ল/হাইপোথিসিস বাতিল হতে পারে।নানারকম থিওরি আছে।যেমনঃ থিওরি অফ রিলেটিভিটি, কোয়ান্টাম থিওরি,থিওরি অফ ইভ্যুলুশান।প্রথম দুইটা নিয়ে খুব একটা ঘাটাঘাটি করা হয় না।তিন নাম্বারটা থিওরি কিনা সেইটা নিয়েই সমস্যা।হ্যাঁ,ডারউইনিয়ান ইভ্যুলুশান থিওরি।শুধু,পৃথিবী না অন্য কোনো গ্রহে,অন্য কোনো গ্যালাক্সিতে যদি প্রাণের উদ্ভব হয়,সেই প্রাণ যদি কার্বন বাদ দিয়ে সিলিকন কেন্দ্রিকও হয়,তবুও ন্যাচারাল সিলেকশান খাটবে।অনেকের মনে হতে পারে,ইভ্যুলুশানের তো ম্যাথমেটিকাল ব্যাখা নাই।কথা ভুল,সেই কাজ করে পপুলেশন জেনেটিক্স।পপুলেশন জেনেটিক্স এর কারণে ন্যাচারাল সিলেকশান এখন খুবই কনফিডেন্ট।এরপর আরেকটা কথা:এখন স্ট্রিং থিওরির নাম শোনা যায়।আমি জেনারেল রিলেটিভিটি,স্ট্রিং থিওরির কিচ্ছু বুঝি না।কিচ্ছু না।তবে এতটুকু জানি,স্ট্রিং থিওরি ম্যাথমেটিকালি প্রমাণিত।ফিজিক্সে এখনো তা হাইপোথিসিস।এক্সপেরিমেন্টালি স্ট্রিং থিওরি প্রমাণিত করতে যেই যন্ত্রপাতি লাগবে,তা একটা গ্যালাক্সির সমান হবে।তাই,এইটা আদৌ প্রমাণিত হবে কিনা-সেইটা নিয়ে সংশয় আছে।গণিতে অঙ্ক মিললেই তাকে থিওরি বলা হয়।ফিজিক্সে থিওরি আরও বহুদূর।
"Physics is to math what sex is to masturbation."-Richard Feynman." কেউ অফেন্ড হয়েন না।ফাইনম্যান মানুষটার উক্তিগুলো এমনই।
এরপর আরেকটা টার্ম শোনা যায় 'ফ্যাক্ট'।এই ফ্যাক্ট জিনিসটার তেমন কোনো গুরুত্ব নেই বিজ্ঞানে।তুমি একটা কিছু দেখলা,সেইগুলো পয়েন্ট আউট করে নোট করলা-অইটা হবে ফ্যাক্ট।আর কিছুই না।আজকের পর্ব এইটুকুই।